স্মরণ থেকেই ’স্মারক’ শব্দের উৎপত্তি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান ও ঘটনাসমূহকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে প্রতিকী মুদ্রা বা নোট ছাপে, তাই স্মারক মুদ্রা।
বাংলাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানের স্মারক মুদ্রা ও নোট মুদ্রণ করা হয়ে থাকে। যা তাদের আইনি, সাংবিধানিক, এবং প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার ও ক্ষমতা । অতএব, স্মারক মুদ্রা বা নোট মুদ্রণ সর্বসাধারণের জন্য অর্থাৎ যেকোনো ব্যাক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সম্পুর্ণরুপে শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং দেশের আইন অবমাননা হিসাবে গণ্য হবে ।
কিন্তু সম্প্রতি একটা বিষয় লক্ষণীয় যে,
বাংলাদেশ ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিজেদের স্মারক নোট তৈরি করেছে। টাকাটা সরাসরি বাংলাদেশী ৫০ টাকার আদলে তৈরি করা হয়েছে। সম্ভবত তাদের শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পাঁচটি ইট দান করলে উপহারস্বরূপ এই টাকা দেওয়া হয়।
এটা যদিও আপামর সর্ব সাধারণের কাছে মূল্যহীন টাকা কিন্তু এই টাকা তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনার দিকে ইশারা দেয়। ইসকনে দান করা প্রতিটি ইটের বিনিময়ে এই টাকা তারা বাড়িতে নিয়ে যাবে আর স্বপ্ন দেখবে রাম রাজত্বের। এটা হলো বুদ্ধিভিত্তিক আগ্রাসন, বুদ্ধিভিত্তিক লড়াই।
প্রশ্ন থেকে যায় তারা চাঁদা উঠানোর জন্য এই পদ্ধতি কেন ব্যবহার করেছে, দেশের সাংবিধানিক সত্ত্বার সাথে তাদের এই মুদ্রণ কি অর্থ বহন করে? সরকার এই বিষয়ে কিছু ভাবছে না কেন? তাহলে সরকারের ভিতরেও কি আরেকটা সরকার আছে? যারা এই ইন্ধনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই ভাবনাগুলো অহেতুক নয়!
- প্রাসঙ্গিক ভাবে উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনির যে পোশাক সরকার দ্বারা নির্বাচিত যা তারা অফিসিয়ালি পরিধান করে থাকে তা কিন্তু সর্বসাধারণের জন্য প্রস্তুত করা, পরিধান করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে পরিগণিত হয়। যদি তাই হয় তবে কি ইসকন দেশের সার্বভৌমত্তের জন্য হুমকি স্বরূপ নয় কি?
একটা দেশের বিরুদ্ধে প্রথম যে আগ্রাসন শুরু হয় তা বুদ্ধি ভিত্তিক আগ্রাসন। যার আঘাত সর্বোপরি সমাজকে তার অবস্থান থেকে বিচ্যুত করে। স্বাধীনতার যুদ্ধের শেষ দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের চিকিৎসক, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, সমাজ সচেতক এমন অনেক বিদগ্ধ ভাইকে হত্যা করে, যেন জ্ঞান ও শুদ্ধ চিন্তা চেতনার অভাবে দেশ কাবু হয়ে যায়। ইসকনের এই বিষয়ে আমাদেরকে এখনই সচেতন হতে হবে।
তারা চাইলে কোন উপহার কার্ড তৈরি করতে পারতো কিন্তু তারা সরাসরি বাংলাদেশী স্মারক নোট তৈরি করেছে। মনে রাখবেন কোন কিছুই ক্ষুদ্র নয়। এসব ছোট ছোট ঘটনাই বড় ঘটনার ইঙ্গিত দেয়।
তাদের এমন অপরাধমূলক কাজের মাধ্যমে এটা প্রতিয়মান হয় যে,
- স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্টের উপর হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা,
- সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতির উপর সংখ্যালঘুদের কর্তৃত্ব স্থাপনের চেষ্টা ।
অবশেষে যেটা বলতে হয় যে, বাংলাদেশ ইসকন কর্তৃক তৈরিস্মারক নোট হোক সেটা অনলাইন কপি বা হার্ড কপি অনতিবিলম্বে প্রত্যাখ্যান করা হোক তাদের সংগঠনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হোক, এছাড়াও প্রশাসনের সদয় ও দ্রুত দৃষ্টি আকর্ষণ করে এর বিরুধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ।
এছাড়াও বাংলাদেশের আলেম-উলামা, শ্রদ্ধেয় ও সম্মানিত ব্যাক্তিবর্গ এবং সাধারণ জনগনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান যে সব ধরণের মাযহাব , ফির্কা- তরিকা ভুলে গিয়ে হাতে হাত, কাধে কাধ মিলিয়ে একত্র হয়ে মুসলিম সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে কাজ করার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি ।
0 Comments