বাংলাদেশে খৃষ্টান মিশনারির অপতৎপরতা ও আমাদের করণীয় (পর্ব-০২)


একটি পরিসংখ্যান

দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন মূল দাবী হলেও তাদের কোন কোন এনজিও এসব কর্মকাণ্ডের আড়ালে খৃষ্টান মিশনারির “ধর্মান্তর কর্মসূচি” প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তারা সমাজের অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীকে ধর্মান্তরের প্রধান টার্গেট বানায় ।

বাংলাদেশের খৃষ্টান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করলে সে কথার প্রমাণ মিলে।

১৮৮১ সালে প্রতি ৬ হাজার লোকের মাঝে ১ জন খৃষ্টান ছিল। সে সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭৪ সালে প্রতি ৩২৬ জনের মাঝে ১ জন, ১৯৮১ সালে প্রতি ২৯ জনের মাঝে ১ জন, ১৯৯১ সালে প্রতি বাইশজনের মাঝে একজন খৃষ্টান রয়েছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ১৯৩৯ সালে খৃষ্টান জনসংখ্যা ছিল ৫০ হাজার। তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৯১ সালে আদমশুমারিতে খৃষ্টান জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখে। ২০০১ সালের আদমশুমারিতে খৃষ্টান জনসংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নীলফামারীতে মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার চাঞ্চল্যকর তথ্য

দৈনিক করতোয়ার ২১ এপ্রিল ২০০৮ এর একটি সংবাদ এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো –

জলঢাকা প্রতিনিধিঃ নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার খুটামারা, কৈমারী, বালাগ্রাম, মীরগঞ্জ, শিমুলবাড়ী, কিশোরগঞ্জের পুটিমারী ও বড়ভিটার হিন্দুদের অর্থের লোভ দেখিয়ে খৃষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১৬ এপ্রিল খুটামারা ইউনিয়নের ২০ জন মহিলা ও ৪ জন পুরুষ; পুটিমারী, কচুকাটা ও পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের ১৮ জন; বড় ভিটা ও কৈমারী ইউনিয়নের ১০ জন মহিলা ও পুরুষের অভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওমেগা ফেলোশীপ চার্চের কথা বলে দিনাজপুর, বীরগঞ্জ উপজেলার ৭ নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামের মিশন স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার সেখানে গিয়ে খৃষ্টান বানানোর কথা জানতে পারার পর এলাকার মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। পরে ঐ ইউপির চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র দেব শর্মা তাদেরকে উদ্ধার করে নিজ নিজ এলাকায় পাঠিয়ে দেন। বীরগঞ্জ থানার ওসি জানান, গত ১৬ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট প্রতারকদের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে ।

৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ৫৫ মুসলমানকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা

নয়া দিগন্তের ২৭ মে ২০১০ ইং তারিখের একটি পেপার কাটিং এখানে তুলে ধরা হলোঃ

সাইফুল মাহমুদ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ …….. প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে ঋণ প্রদানের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ৫৫ মুসলমান নারী ও পুরুষকে খৃষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত করণের চেষ্টাকালে স্থানীয় জনতার সহায়তায় একজন বিদেশী ধর্মযাজকসহ তিন ধর্মযাজক ও তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত দুই পালককে আটক করে পুলিশ। এ সময় ৫৫ মুসলমান নারী ও পুরুষকে উদ্ধার করা হয়।

কুড়িগ্রামে মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার অবিশ্বাস্য তথ্য

Christian Today এটি খ্রিস্টানদের একটি ওয়েবসাইট।এই ওয়েবসাইটে ২১ এ জুলাই ২০১৬ সালে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করে। এই আর্টিকেলে তারা দাবি করেছে যে,বাংলাদেশে হাজার হাজার মুসলিম খ্রিস্টান ধর্ম গ্ৰহণ করছে। তারা এটাও দাবি করেছে বাংলাদেশে গত ছয় বছরে ৯১,০০০ মুসলিম খ্রিস্টান ধর্ম গ্ৰহন করেছে। আমরা মনে করি তাদের এই দাবি মিথ্যা নয়।তাদের প্রতিটি কাজ বলে দেয় তাদের এই দাবি সত্য।

বাংলাদেশে একজন মুসলিম যার নাম ফারুক আল-আহমেদ। তিনি ৯০-এর দশকের দিকে খ্রিস্টান ধর্ম গ্ৰহণ করেন এবং পরে মিশনারীদের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে  তিনি ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে  সুসমাচার (খৃস্ট ধর্ম) প্রচার করতে থাকেন।খ্রিস্টান বিশ্বাসের বিস্তার সম্পর্কে এই ওয়েবসাইটে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করা হয়েছে।

তিনি বলেন,

যখন আমি কুড়িগ্রামে আমার প্রচার কাজ শুরু করি, সেখানে শুধুমাত্র একটি ঐতিহ্যবাহী খ্রিস্টান পরিবার ছিলো এবং এখন বর্তমানে প্রায় 1,500  মুসলিম খ্রিস্টান ধর্ম গ্ৰহণ করেছে‌। নতুন বিশ্বাসীরা এই এলাকায় ঈশ্বরের প্রশংসা করছে।

খৃষ্টধর্ম প্রচারকদের কয়েকজন

(১) ড. উইলিয়াম কেরীঃ তিনি পি.এইচ.ডি. হোল্ডার। তিনি পশ্চিম বাংলায় কৃষি কাজ করেছেন। তার ভাষা ইংরেজি, তিনি এদেশে এসে বাংলা ভাষা শিখেন। তিনি ইংল্যান্ডে অর্ডার দিয়ে বাংলা বর্ণের ছাপামেশিন নিয়ে আসেন আর বাংলা ভাষায় বাইবেল ছাপান। তিনি সর্বপ্রথম ইংরেজি বাইবেল বাংলায় অনুবাদ করে ভারতবাসীর মধ্যে বিলি করেন। এমন ত্যাগ যদি বর্তমান মুসলমানদের মধ্যে থাকতো, তাহলে আমাদের এতো দুর্দশায় পড়তে হতো না।

(২) মাদার তেরেসাঃ  তিনি অবিবাহিতা ছিলেন। বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলায় তার প্রতিষ্ঠিত ৩০০ এতিমখানা রয়েছে। মাদার তেরেসার এক বড় টার্গেট ছিল ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খৃষ্টান রাষ্ট্রে পরিণত করা।

মিশনারি স্কুলের মাধ্যমে তাদের টার্গেট

খৃষ্টান মিশনারি প্রেরক সমিতির সভাপতি বলেন, খৃষ্টান মিশনারিদের বড় উদ্দেশ্য, যে সব ছাত্র আমাদের স্কুল কলেজ থেকে শিক্ষা সমাপন করে বের হচ্ছে, তাদের মন মস্তিষ্ক আমাদের ধাঁচে গড়ে তোলা। (আপনি ঢাকায় বা বাংলাদেশের প্রায় অঞ্চলে দেখবেন একটি স্কুলে ছাত্র দেওয়ার চেয়ে অভিভাবকরা বেশী খুশী হোন মিশন বা গির্জা স্কুলে ছেলে মেয়েদের ভর্তি করতে পেরে। কারণ ইংলিশ মিডিয়ামে পড়বে, ইংরেজি বলতে পারবে, স্মার্ট হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ পাবে, বহির্বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে পারবে।) তিনি বলেছেন, কোন গির্জা স্কুলে যদি কোন মুসলমান ছেলে পড়ে তাহলে আমাদের লাভ। কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যায়, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। জুমআয় যাবে, ঈদের নামায পড়বে, মা-বাবা মারা গেলে জানাযায় যাবে কিন্তু মন-মেজাজ, চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা ইসলাম বিমুখ হবে। ইসলামের পক্ষে সে কথা বলবে না। বরং সে নিজের অজ্ঞাতে আমাদের মিশনারিগুলোর একজন বড় পৃষ্ঠপোষক হয়ে যাবে। বর্তমানে তাদের কথার প্রতিফলনের বহু নমুনা দেখা যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে ধর্মান্তরকরণ

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে গরীব অসহায়দের চিকিৎসা সেবার নামে তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে খৃষ্টান বানানোর গভীর ষড়যন্ত্রের নীলনকশা তারা বাস্তবায়ন করে চলেছে। মিশনারিদের এই নিরন্তর সাধনায় তারা আদৌ ব্যর্থ হচ্ছে না।


Like it? Share with your friends!

0 Comments