বাংলাদেশে মিশনারির আগমন
মিশনারি হলো খৃষ্টানদের দাওয়াতি সংস্থা। সারা দুনিয়াতে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে লক্ষ্ লক্ষ প্রচারকের মাধ্যমে খৃষ্টানরা খৃষ্টধর্মের দাওয়াত দিয়ে আসছে। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে, আজ থেকে পাঁচশ বা ছয়শ বছর আগে খৃষ্টান মিশনারিরা এই বাংলায় আসে।
মোগল সম্রাট আকবর ভারতের বাঙাল প্রদেশের প্রসিদ্ধ স্থান হুগলিতে পর্তুগিজদের বসতি স্থাপনের অনুমতি দিলে তাদের ছত্রছায়ায় মিশনারিরা এসে এলাকায় গির্জা প্রতিষ্ঠা করলো, স্কুল বানালো, হাসপাতাল চালু করলো।
এভাবে ১৬২১ খৃষ্টাব্দে এতদাঞ্চলে খৃষ্টান মিশনারি তৎপরতা পূর্ণ উদ্যমে শুরু হয়। ১৬৩৩ খৃষ্টাব্দে সম্রাট শাহজাহান ৭৭৭ বিঘা জমি বিনা খাজনায় (লা-খেরাজ) খৃষ্টান মিশনারিদের দান করলেন। ফলে তারা আরো বেশী উৎসাহিত হয়। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোঘল আমলে খৃষ্টান মিশনারিরা অগস্টেইনিয়া গির্জা গড়ে তোলে ।
আযাদী আন্দোলনের পর ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে খৃষ্টানদের Board of Directors গৃহীত প্রস্তাবে যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তাতে খোলাখুলি বলা হয়েছে যে, “প্রকৃতি ভারতীয় উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলটি এই জন্যে ব্রিটেনের কাছে সোপর্দ করে, যাতে এতদঅঞ্চলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত মিশনারিদের বিজয় পতাকা উড্ডীন হয়। তাই এতদঞ্চলকে খৃষ্টান রাষ্ট্রে পরিণত করার আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিৎ।” (সূত্রঃ তারিখে পাকিস্তান)
বর্তমানে এটাই বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চলছে।
৭১ এ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ৩০,০০০ এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। এই এনজিওরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে।
যে সমস্ত এনজিও সেবার নামে সরাসরি বাংলাদেশে ধর্ম প্রচার করছে
(১) কারিতাস, (২) এন.সি.সি. (ননলাইট সেন্ট্রাল কমিটি) (৩) কনসার্ন, (৪) এডরা ওয়াই.ডব্লিউ.সি. (৫) ফেমিলিজ ফর চিলড্রেন, (৬) সেভেন ডে এডভেঞ্চারিস্ট, (৭) চার্চ অফ বাংলাদেশ, (৮) আল-হানিফ কল্যাণ ট্রাস্ট ইত্যাদি।
প্রতিষ্ঠান ও প্রচার মাধ্যম
তারা বাংলাদেশের নানা স্থানে বিভিন্ন নামে অসংখ্য সংস্থা স্থাপন করেছে। যেমন –
* নুর-ই-ইলাহী, পোস্টবক্স নং ৩৫০৭, ঢাকা,
* খোদার পথ, পোস্টবক্স নং ৫৮, ঢাকা – ১০০০,
* মাসীহী জামাত, পোস্টবক্স নং ৩৫০৭, ঢাকা,
* আল হানিফ কল্যাণ ট্রাস্ট,
* ডাকযোগে বাইবেল শিক্ষার জন্য পোস্টবক্স ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
প্রকাশনায় অপকৌশল
ধর্মগ্রন্থ ও সংস্থার নাম পরিবর্তন
মিশনারিরা মানুষকে ধর্মান্তরিত করার জন্য বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে থাকে। যেমন খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ সারা বিশ্বে বাইবেল নামেই বহুল পরিচিত। কিন্তু বাংলা ভাষায় খৃষ্টানরা বাইবেলকে “ধর্ম পুস্তক” নামে ১৯৬৩ সালে “পাকিস্তান বাইবেল সোসাইটি” থেকে প্রকাশ করে ।
পরবর্তীতে বাইবেলকে “কিতাবুল মুকাদ্দাস” নামে প্রকাশ করে ।
বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম জালিয়াতি
সর্বোপরি তাদের নির্লজ্জ ও জঘন্যতম জালিয়াতির দৃষ্টান্ত হলো দীর্ঘ ১৬ বছর সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার পর কুরআনের বিভিন্ন আয়াত চুরি করে প্রতিটি অধ্যায়ে আরবিতে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” দিয়ে শুরু করে তাদের কথিত ইঞ্জিল শরীফ প্রকাশ করেছে। অথচ তাদের কোন কিছু শুরু করা হয় “পিতা-পুত্র ও পবিত্র আত্মা” এর নামে। বিশ্বের ইতিহাসে ধর্মের নামে এতো বড় জালিয়াতির নজির আর নেই।
প্রচার ও প্রচারণার অপকৌশল
নকল ইমাম তৈরি
তারা গোপনে খৃষ্টান দেশগুলোতে ছদ্মবেশী ইমাম তৈরি করে মুসলিম দেশে পাঠিয়ে দেয়। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসকে নষ্ট করে তাদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করাই হলো এর মূল উদ্দেশ্য।
ইসলামী নাম ধারণ তারা এখন ইসলামী কায়দায় নাম রাখতে শুরু করেছে, যেমন – আবদুল ওয়াহহাব, সুলতান আহমেদ পৌল ইত্যাদি ।
0 Comments