দাওয়াতি কার্যক্রম
চিঠির মাধ্যমে দাওয়াত
আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অমুসলিম নেতাদের চিঠির মাধ্যমে দাওয়াত দিতেন। আপনিও সেই সুন্নাত আদায়ের লক্ষ্যে দেশের অমুসলিম এম.পি. মন্ত্রীকে চিঠির মাধ্যমে দাওয়াত প্রদান করতে পারেন। আপনার চিঠিটা পাওয়া তাদের হক।
ভেবে দেখুন, কিছু করতে পারেন কিনা।
করণীয়
খৃষ্টান মিশনারির ধর্মান্তরের শিকার হয়ে অনেক সাধারণ মুসলমান চিরদিনের জন্য সরলপথ হারিয়ে জাহান্নামী হচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের নিজস্ব সভ্যতা-সংস্কৃতির প্রচার করে মুসলিম মনন-মস্তিস্ককে খৃষ্টবাদের ছাঁচে নেওয়ার কৌশল করছে। এমতাবস্থায় প্রিয় ছাত্রভাইদের কর্তব্য, মিশনারিগুলোর তৎপরতার অবগতি ও তা দূর করার পন্থা চর্চার মাধ্যমে তাদের খৃষ্টরাজ্য গড়ার স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করা এবং তাদের অপতৎপরতার গতিকে রুখে দেওয়া। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে কয়েকটি কাজ করা যেতে পারে –
(১) মিডিয়াঃ মিডিয়ার মাধ্যমে সত্যকে সত্য হিসেবে মানুষের সামনে তুলে ধরা, যাতে তারা মিডিয়ায় অপপ্রচার চালিয়ে ইসলামের ক্ষতি সাধনে ব্যর্থ হয়।
(২) রাজনীতিবিদদের সতর্ক করাঃ খৃষ্টান মিশনারিগুলো এ দেশের রাজনৈতিক ফিল্ড নিজেদের দখলে আনার জন্য রাজনীতিবিদদের মগজ ধোলাই কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।লামের ক্ষতি সাধনে ব্যর্থ হয়। এর উৎকৃষ্ট নজির জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ও ফতোয়া বিরোধী রায় বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা। তাদের এ ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আমাদের উচিত রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সরকারী বেসরকারি সিনিয়র কর্মকর্তা ও সব শ্রেণীর লোকদের উক্ত বিষয়ে সরাসরি ও চিঠির মাধ্যমে সতর্ক করা।
(৩) লেখালেখিঃ আজ লেখালেখি ও প্রকাশনার দিক দিয়েও তারা পিছিয়ে নেই বরং একধাপ এগিয়েই আছে। খৃষ্টান মিশনারিগুলো মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বই লিখে প্রচার করছে। তার মধ্যে কয়েকটি বইয়ের নাম আমি আপনাদের সামনে পেশ করছি – “গুনাহগারদের জন্য বেহেশতের পথ” (এই নামটির শুরুতে আরবিতে লেখা – “ত্বারিকুল জান্নাতি লিল মুযনিবি”), বেলালের লেখা “আপনার জন্য আমার অন্তরের কথা”, “গুনাহ থেকে মুক্তির পথ”, “কুরআনের আলোকে জান্নাতের পথ” ইত্যাদি। এগুলো হলো মুসলমানদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা খৃষ্টানদের বই। কিন্তু আফসোসের সাথে বলতে হয়, খৃষ্টানদের উদ্দেশ্যে কিংবা হিন্দুদের উদ্দেশ্যে লেখা কয়টি বই আছে আমাদের ?
আমার ভাই, আমাকে একটি বই দেখান যে, এই বইটি খৃষ্টানদের উদ্দেশ্যে লিখে তাদের মাঝে প্রচার করা হচ্ছে।
উলামায়ে কেরামের করণীয়
উলামায়ে কেরাম হলেন ধর্মীয় অভিভাবক। আর ধর্মীয় অভিভাবকদের দায়িত্ব তো আরো বেশী। ছকে বাঁধা দ্বীনি খেদমতে আবদ্ধ হয়ে থাকা তাদের শান নয়। সমাজের গভীরে অনুপ্রবেশকারী মিশনারি ও তাদের তাবেদার এনজিওদের অপতৎপরতার প্রতি সুতীক্ষ্ণ নজর রাখা তো তাদের ফরয কর্তব্য।
কতো ভালো হতো, যদি উলামায়ে কেরাম নিন্ম বর্ণিত বিষয়ের প্রতিও মনোযোগী হতেন –
(১) সরাসরি খৃষ্টানদের দাওয়াত দেওয়া, বিশেষ করে যারা খৃষ্টধর্মের প্রচারক।
(২) ব্র্যাক, আশা ইত্যাদি স্কুলের মোকাবেলায় মসজিদে মসজিদে মক্তব প্রতিষ্ঠা করা এবং প্রতিটি গ্রামে একটি করে ইসলামিক কিন্ডারগার্ডেন স্কুল কায়েম করা।
(৩) ব্র্যাক স্কুল, আনন্দ স্কুল ইত্যাদি স্কুলে মুসলমান বাচ্চাদের ইসলামী শিক্ষা দেওয়ার জন্য ধর্মীয় শিক্ষকের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা।
(৪) অমুসলিমদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার জন্য ছাত্রদেরকে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করা।
ব্যবসায়ী ও বিত্তবানদের করণীয়
আল্লাহ আপনাদের অর্থ-সম্পদ দিয়েছেন আল্লাহ’র রাস্তায় খরচ করার জন্য। আজ খৃষ্টানরা যদি তাদের আয়ের ১০ ভাগের ১ ভাগ তাদের মিথ্যা ধর্ম প্রচারের জন্য খরচ করতে পারে, তাহলে আমরা কেন আমাদের সত্য ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে খরচ করতে পারবো না। আমাদের তো বরং দ্বীন প্রচারের জন্য প্রয়োজনে সমস্ত সম্পদ ব্যয় করার মন-মানসিকতা থাকতে হবে।
সর্বসাধারণের জন্য করনীয়
ডাঃ জাকির নায়েক স্যার কোন এক লেকাচারে বলছিলেন,
আপনি যদি মনে করেন আমি শাইখ আহমেদ দিদাত এর মতো হবো তারপরে দাওয়াতী কাজ শুরু করবো। তাহলে আপনার এই চিন্তা ভুল। হতে পারে আপনি কখনও আহমেদ দিদাত এর মতো হতে পারবেন না ।
এজন্য যতটুকু জানেন ততটুকু নিয়ে দাওয়াতের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। অন্যন্যাদের কে আহবান করুন যাতে তারাও এ কাজে অগ্রসর হয় । ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে তুলে যাতে আমরা সফলকাম হতে পারি । আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করবে
তথ্যসূত্র : – মুসলিম বিশ্বে ইহুদী খৃষ্টানদের মরণ ছোবল
আল্লাহ এই বইটির সংকলক ও সম্পাদক মুফতী মীযানুর রহমান কাসেমী এবং এই কাজের সাথে জড়িত সকলকে দুনিয়া ও আখিরাতে হাসানাহ দান করুন, আমীন।
আলিমগণ কর্তৃক রচিত এ সম্পর্কিত বেশ কিছু ভালো কিতাব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত কিতাব ইযহারুল হক, শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রচিত পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা ইত্যাদি বই।
0 Comments