বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একটি বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে পরিচিত যা শিশুদের নিয়ে কাজ করে। যে সংস্থা চালাচ্ছে, কিশোর কুমার দাস আর শিপ্রা দাস নামক দুই ভাই বোন। (Registered under the Bangladesh Department of Social Services registration No. is S-12258/2015)
বিদ্যানন্দ ২০১৩ সালের ২২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত । এরপর ২০১৪ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রাম শাখা এবং সবশেষে ২০২১ সালে খাগড়াছড়িতে বিদ্যানন্দের দ্বাদশ শাখা চালু করা হয়। বিদ্যানন্দের মোট ১৭টি শাখা রয়েছে।
এ সংগঠনটির কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে-
১. সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মৌলিক শিক্ষা প্রদান,
২. ”এক টাকায় আহার প্রকল্প”
৩. চিকিৎসা ও আইনি সেবা প্রদান প্রদান।
উপরোক্ত কার্যক্রমের দ্বারা এটা প্রতীয়মান হয় যে, তাদের কার্যাবলি প্রশংসার যোগ্য, যা মানুষের কল্যাণে আসবে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি একটি আই ওয়াশ বা ব্রেইন ওয়াশও বলা যেতে পারে । অর্থাৎ এ বিষয়ে একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য- ”আলোর নিচে অন্ধকার”
কিশোর কুমার দাস পেরুতে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করেছে হেড অব মার্কেটিং হিসেবে। খুব ভালো করে জানে কিভাবে প্রচার-প্রসার করে দাতা গোষ্ঠীর চোখে পড়তে হয়। `১ টাকায় খাবার’, ‘বিনামূল্যে ইফতারি বিলি’ প্রজেক্ট নামিয়ে তারপর সেটা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিউজ করে পাবলিসিটি করেছে।
তবে বিপত্তি বাধে বা বলা যায় যে তাদের সত্যিকারের রুপ প্রকাশিত হয়,
তাদের কথিত এক টাকায় আহার প্রকল্পের একই ছবি একাধিকবার পোস্ট , বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক একটি ফেসবুক পোষ্টে অন্যের ছবি বিনা অনুমতিতে ব্যবহার এবং মিথ্যা তথ্য প্রদান, ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোস্টে মজিদ চাচা নামক ব্যক্তিকে কখনো বৃদ্ধ, নৌকার মাঝি, দুঃস্থ, দিন মজুর, মৃত্যুপথ যাত্রী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইত্যাদি হিসেবে উল্লেখ করা ।
- এক টাকায় আহার- 1 Taka Meal ফেইজবুক পেইজে ২০২১, নভেম্বরের ২৪ তারিখ ও ২০২২ সালের ২০ মার্চ এই দুদিনে একই ছবি (কোরবানির জন্য গরু) পোস্ট করে ।
- ১৬ এপ্রিল ’২৩ বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে ‘বঙ্গবাজারের পোড়া কাপড়ের তৈরি অলংকার’ ক্যাপশনে ৬টি ছবি পোস্ট করে। এর মধ্যে ৪টি ছবিই গত ৯ মার্চ একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিল । যা স্পষ্টতই প্রতারণা , বা মানুষকে ধোকা দেওয়ার শামিল ।
- মজিদ চাচা নামক ব্যক্তিকে কখনো বৃদ্ধ, দুঃস্থ, দিন মজুর, মৃত্যুপথ যাত্রী, ইত্যাদি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোস্ট করা, যার মাধ্যমে এটা দৃশ্যমান হয় যে -সেই প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের মনুষত্ব্য হীনতা ।
কারণ মানুষকে উপকারের কথা বলে যদি আবার প্রতারণার আশ্রই নেওয়া হয় তাহলে সেই কাজের মধ্যে নিঃসনে্দহে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে সেটা হতে পারে অর্থ লোপাট বা ভিন্ন কিছু ।
রোববার (১৬ এপ্রিল) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘যেটা খারাপ কাজ, সেটাকে খারাপ বলতে আমার দ্বিধা নাই। আরেক পেজ থেকে ফটো নিয়ে নিজেদের বলে চালানো নিঃসন্দেহে অসততা! এক গরু কয়েকবার কোরবানি করাও অসততা। এক মজিদ চাচাকে সব জায়গায় হাজির করা হয়ে থাকলে, সেটাও অসততা নিশ্চয়ই। এগুলো কোনোভাবেই ভালো ইমপ্রেশন দেয় না।’
এখানে সুস্পষ্ট লক্ষনীয় তাদের অন্যায় ,দুষ্কর্মগুলো ।
- তাছাড়া তাদের আরেকটি পথ হলো যে নিজেদের অপকর্ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর এরা সংখ্যালঘুদের তকমা নিজেদের গায়ে লাগিয়ে নিয়েছে। বিপদে পড়লে নিজেকে ডিফেন্ড করার সবচেয়ে ঘৃনিত পদ্ধতি হচ্ছে ধর্মীয় পরিচয় নিজের সামনে নিয়ে আসা। আমি চুরি করবো কিন্তু কেউ আমাকে চোর গালি দিলে আমি আমার সংখ্যালঘু ধর্মীয় পরিচয় সামনে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করবো, এটা অত্যন্ত বড় ধরণের একটা নোংরামি।
- এদের অপকর্ম ফাঁস হয়েছে মানুষের কাছ থেকে যাকাতের টাকা চাওয়ার পরে। নন মুসলিম হওয়ার কারণে যাকাতের ব্যাপারে এদের ধারণা ছিল সম্ভবত সামান্য। আমাদের জন্য যাকাত ইসলামের ফরজ বিধান। প্রতিদিন নিয়মিত সালাত আদায় করার মতোই গুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্য পালনীয়। যাকাতের দেওয়ার নিয়ম, যাকাত দেওয়ার পরিমাণ, আর কোথায় দেয়া যাবে আর কোথায় দেয়া যাবে না কিছু সুস্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে নিয়মকানুন বলে দেয়া আছে। কারো উপর যাকাত ফরজ হলে তাকে সেটা দিতেই হবে, এটা নিজের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না। যাকাত দেওয়ার সময় তাকে নিশ্চিত হতে হবে যে যাকাতটা সঠিক মানুষকেই দেওয়া হচ্ছে। আর ঠিক এই কারণেই মানুষজন বিদ্যানন্দকে যাকাত দেওয়ার আগে তারা আসলে কী করছে? কীভাবে টাকা কোথায় ব্যবহার করছে? সেটা সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। যখন ভালোমতো এদের সম্বন্ধে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়, তখনই যাবতীয় কিছু উন্মুক্ত হওয়া শুরু হয়ে যায়।
যে বিষয়ে অভিযোগগুলো গুরুতরঃ
১) যেহেতু সরকারের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে এন জি ও চালাচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছ অডিট হওয়া আবশ্যক।
২) মুসলিমদের জাকাতের টাকা নিয়ে নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা হয়েছে বা হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখার জোর দাবী জানাচ্ছি।
৩) এরা কি সাহায্যের নামে উপনিবেশ তৈরিতে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে কি না সচেতন মহলের ভেবে দেখা উচিত। এবং
৪) প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে এদের আঁতাত কেন এত গভীর, যখনই কোন দোষ নিজের কাঁদে এসে পড়ে তারা সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে তাদের কাছে ধরনা দেয়?
৫) জাকাত যে ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি সেক্যুলার সমাজকে বুঝানোর দায়িত্ব এদেশের আলেম ওলামাদের।
0 Comments