অবিলম্বে তালাবদ্ধ মাসজিদ খুলে দেওয়ার আহ্বান”


শুরুতেই দৃষ্টি আকর্শন করছি সম্মানিত জেলা প্রশাসক , নাটোর ।

📰  দৈনিক জাতীয় অপরাধ দমনের  ২৮ সেপ্টেম্বর্ ২০২৩ এর একটি সংবাদ এখানে আংশিক তুলে ধরা হলো –

শাজানপুর বগুড়া প্রতিনিধি :

আজ ২৮-৯-২৩ তারিখ সকালে নাটোরের লালপুর মুঠোফোনে জানতে পারি গত ১১/০৪/২০২৩ ইং তারিখ নাটোরে লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া কারিগর পাড়ায় সরকার বাড়িতে নিজের জমিতে পারিবারিকভাবে তৈরি আহলে হাদিস মসজিদে নামাজ নিষেধ করে দেন লালপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

সেই থেকে সাত মাস হলো সেই মসজিদটাতে তালা ঝুলছে। নামাজের জায়গা না থাকায় বাড়িতেই একটি ঘরে পাচ ওয়াক্ত ও জুমার সালাত আদায় করছে তারা।


বিগত দুই বছর আগে কারিগর পাড়ায় সরকার বাড়িতে নিজের জমিতে নির্মিত আহলে হাদিস মসজিদ নির্মান করে সরকার বাড়ির লোকজন নিয়মিতভাবে নামাজ আদায় করে আসছেন ।

এবার রমজানে ০২/০৪/২০২৩ তারিখে তারাবির নামাজরত অবস্থায় ওই মহল্লার পাচ শতাধিক লোক এসে সন্ত্রাসী কায়দায় বর্বরোচিত ভাবে মসজিদে হামলা ও ভাংচুর করে নামাজ বন্ধ করে দেয়।

পরের দিন ৩/৪ /২৩ তারিখ সকালে লালপুর থানায় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে জানালে পরের দিন ৪/৪/২৩ তারিখ সন্ধায় ওয়ালিয়া পুলিশ ফাড়িতে লালপুর থানা তদন্ত আফিসার উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংসায় বসেন, হানাফি মাযহাবের লোকেদের চাপে তদন্ত অফিসার আহলে হাদিস মসজিদে নামাজ নিষেধ করে দেন। বিষয়টি ৮/৪/২৩ তারিখে পুনরায় জেলা পুলিশ সুপার কে জানালে তিনি নামাজ পড়ার অনুমতি দেন।

সেখানে নামাজ পড়তে গেলে ওয়ালিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলম ও শফি মেম্বার নামাজে বাধা দেয় ও ইউএনও মহোদয় এর মাধ্যমে মীমাংসার কথা বলে। অদ্য ১১/০৪/২০২৩ তারিখ মঙ্গলবার বেলা ১১ টার সময় উভই পক্ষ লালপুর ইউএনও অফিসে বসলে ইউএনও মহোদয় উভয় পক্ষের কথা শুনে সরকারবাড়ির লোকদের তৈরি আহলে হাদিস মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ করে দেন।

বিষয়টিতে আহলেহাদিস সরকার বাড়ির লোকজন সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বলে জানিয়েছে সরকার বাড়ির সদস্য মোজাহারুল ইসলাম মজনু।

বিস্তারিত এই লিংকে-  https://www.aparadhdamon.com/তালা-বন্দি-অবস্থায়-সাত-ম/

থেকে এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান যে,

  • সেই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ধর্মীয় ,গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হনন করা হয়েছে কারণ —

সংবিধানের () অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন ৷ আর সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে –

() আইন, জনশৃঙ্খলা নৈতিকতাসাপেক্ষে

() প্রত্যেক নাগরিকের যে কোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে,

() প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে ।

  • পাশাপাশি আহলে হাদিসদের ধর্মীয় অনভুতিতে চরমভাবে আঘাত হানা হয়েছে । কাজেই এদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হেনে ইসলাম ধর্মের সীমালংঘন করা হয়েছে ।

মহান আল্লাহ বলেন, আর তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর ঘর মসজিদগুলোতে তাঁর নাম স্বরণ করতে বাধা দেয় এবং এগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করে? অথচ ভীত-সন্ত্রস্ত না হয়ে তাদের সেগুলোতে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিল না। দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্চনা ও আখেরাতে রয়েছে মহাশাস্তি ।

(সূরা আল-বাক্বারাহ : ১১৪)

উপরিউক্ত আয়াত ও তার প্রেক্ষাপটে বুঝা যায়, মসজিদ ভাঙ্গা বা মুছল্লীদের মসজিদে যেতে বাধা দেয়া অমুসলিমদের কাজ। তাই যুগে যুগে অমুসলিমরাই মসজিদ ভাঙ্গার কাজ করেছে ।

  • জানা আবশ্যক যে, যখন কোন স্থানকে মসজিদ হিসাবে ঘোষণা করা হয়, তখন তার মালিক হয়ে যান স্বয়ং মহান আল্লাহ। আর আল্লাহর মালিকানায় থাকা কোন স্থাপনা ভাঙ্গা আল্লাহর সাথে যুদ্ধের শামিল ।

                                                       (সূরা মায়েদাহ- ৩৩ )

আবার মসজিদ ভাঙ্গার পরে যুক্তি দিয়ে কেউ কেউ সালাফী বা আহলেহাদীছ আক্বীদার মসজিদকে ‘মসজিদে যিরার সাথে তুলনা করে থাকে এবং হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ায়। এদেরকে মুসলিম বলার কোন সুযোগ নেই।

দ্রুত তওবা করে ফিরে আসা তাদের প্রথম পদক্ষেপ হতে হবে। ভাঙ্গা মসজিদ নিজ অর্থায়নে তা দ্রুত নির্মাণ করে দিতে হবে (বুখারী, হা/৩৪৩৬)।

ব্যক্তির সাথে শত্রুতা থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু মসজিদের সাথে শত্রুতা কেবল অমুসলিমদের থাকতে পারে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে অনুতপ্ত হতে হবে।

সুযোগ থাকার পরও যারা তওবা করে ফিরে আসবে না- তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্ছনা এবং কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে (সূরা আল-ফীল : ১-৫; ছহীহ বুখারী, হা/২৪৮২)।

অতএব

অবশেষে এটা বলার প্রয়োজন যে, যারা মুসলিমদের ঈমান বিধ্বংসীকারি বা হননকারী , ইসলাম ধর্মে কালিমা লেপনকারী , মহান রবের সাথে প্রতারণাকরী – মাজার পূজারীদের কর্মকান্ড চলতে দিয়ে সত্যের অনুসারী, মানুষের কল্যাণ কামনাকারীদের কার্যাবলী বন্ধ করা মানে মুসলিম জাতির অনিবার্য পতন ।


Like it? Share with your friends!

0 Comments